প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২২ (মঙ্গলবার) ১১:১৫ পিএম
করোনার ভুয়া রিপোর্টের মামলায় জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারপারসন ডা. সাবরিনা চৌধুরী ১১ বছরের জেল সাজার রায় শুনে হেসে দিয়ে বলেছেন, একদিন মানুষ জানবে সাবরিনা নিরপরাধ ছিলো। একদিন প্রমাণ হবে আমি নির্দোষ। খবর ক্রাইম রিপোর্টার২৪.কমের।
আজ (১৯ জুলাই) মঙ্গলবার চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় শুনে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েই হাসেন সাবরিনা। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সাবরিনা বলেন, বুঝতে পারছিলাম কী হবে, তবে এতটা হবে বুঝতে পারিনি।
একদিন নির্দোষ প্রমাণিত হবেন মন্তব্য করে ডা.সাবরিনা বলেন, একটা কথাই বলবো। আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গেই আছেন। একদিন মানুষ জানবে সাবরিনার অপরাধ ছিল না।
রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে কি না জানতে চাইলে এ বিষয়ে সাবরিনা বলেন, আমি জেকেজির চেয়ারম্যান ছিলাম না, এই সাজা কীভাবে হলো? আপিলের কথা তো পরে।
এরপর সাবরিনাকে মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়ার সময় তার এক আইনজীবী বলেন, বের হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
সে সময় সাবরিনা আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমি তো সেদিনই মরে গেছি। যেদিন আমাকে এখানে ঢোকানো হয়েছে। আমি বের হবো কি না সেটা বড় কথা না। বড় কথা হলো দেশবাসী জানলো আমি অপরাধী।
এরপরে তিনি বলেন, একদিন প্রমাণ হবে সাবরিনা নির্দোষ। আমি নির্দোষ কিন্তু দেশবাসী জানলো আমি অপরাধী। শুধু বলব, আল্লাহ একদিন এর বিচার করবেন।
রায় ঘোষণার সময় ও পরে আসামি সাবরিনার চোখেমুখে চিন্তার কোনো ছাপ দেখা যায়নি। তবে মামলার অন্য আসামিদের স্বজনরা রায় শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কান্না ও আহাজারি করছিলেন।
প্রসঙ্গ,করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী এবং তার স্বামী ও প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফুল চৌধুরীসহ আটজনকে তিনটি আলাদা অভিযোগে ১১ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় করোনা শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা না করেই জেকেজি হেলথকেয়ার ২৭ হাজার মানুষকে রিপোর্ট দেয়।
এর বেশির ভাগই ‘ভুয়া’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এ অভিযোগে ২০২০ সালের ২৩ জুন অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।
পরে ডা. সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুল চৌধুরীর বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করা হলে দুজনকেই আটক করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
ওই বছরের ৫ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে সাবরিনা-আরিফসহ আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লিয়াকত আলী।
২০২০ সালের ২০ আগস্ট আদালত আসামিদের অব্যাহতির আবেদন করে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে এ মামলাটিতে ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে আদালত।
গেলো ১১ মে আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে আসামিরা নিজেদের ‘নির্দোষ’ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন। এরপর গত ২৯ জুন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্যে আজ ১৯ জুলাই দিন ধার্য করেন।খবর ক্রাইম রিপোর্টার২৪.কমের।