খুলনায় পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার রাকিব হত্যা মামলার মূল আসামি মো. ওমর শরীফের পাতানো চাচা মিন্টু খান হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে গতকাল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। খুলনার মহানগর হাকিম মো. ফারুক ইকবালের আদালতে সে জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে মিন্টু বলে, না বলে শরীফ মোটরস থেকে রাকিব চাকরি ছেড়ে চলে যাওয়ায় ওর ওপর শরীফ ও আমি প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত ছিলাম। ঘটনার দিন দোকানের সামনে থেকে রাকিবকে যেতে দেখে শরীফ আমাকে ধরে আনতে বলে। আমি রাকিবকে ধরে দোকানে নিয়ে আসি এবং ওর জিন্সের প্যান্ট খুলে চেপে ধরি আর শরীফ তার মলদ্বারে কম্প্রেসারের পাইপ ঢুকিয়ে দিয়ে হাওয়া দেয়। মুহূর্তের মধ্যে ওর পেট ফুলে যায়। আমার ওর পেটের ওপর পা দিয়ে চাপ দেয়। কিন্তু তাতে বাতাস বের হয়নি এবং রাকিব বমি করতে শুরু করে। দ্রুত তাকে পার্শ্ববর্তী গুডহেলথ ক্লিনিকে নিয়ে যাই। এখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার ফেরত দেন। পরে তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। গত সোমবার মিন্টু ও শরীফকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। ১১ই আগস্ট শরীফ এবং ৬ই আগস্ট শরীফের মা বিউটি বেগম একই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল। এ নিয়ে এ মামলায় সরাসরি জড়িত তিন আসামি ও তিন প্রত্যক্ষদর্শীর ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হলো। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার এস আই কাজী মোস্তাক আহম্মেদ ক্রাইম রিপোর্টার ২৪.কমকে বলেন, গত ৬ই আগস্ট তিন দিনের রিমান্ডের একদিন পর ৭ই আগস্ট বিউটি বেগম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল। মঙ্গলবার শরীফও ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। শরীফ ও তার মা বিউটি বেগম কারাগারে রয়েছে। গতকাল বেলা ২টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মিন্টুকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতের বাইরে রাকিবের পরিবারের লোকজন বিক্ষোভ করেন। বিকাল ৫টায় জবানবন্দি রেকর্ড শেষ করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তিন আসামি ও তিনজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর বক্তব্যে যথেষ্ট মিল রয়েছে। মামলার চার্জশিটের জন্য যা কিছু প্রমাণ দরকার তা প্রায় আমরা পেয়ে গেছি। অচিরেই চার্জশিট দেয়া হবে।
গত ৩রা আগস্ট বিকালে নগরীর টুটপাড়া কবরখানা মোড় এলাকায় পৈশাচিক নির্যাতন চালিয়ে গ্যারেজের কর্মচারী শিশু রাকিবকে (১২) হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন নিহত শিশুর বাবা মো. নূরু আলম বাদী হয়ে শরীফ মোটরসের মালিক শরীফ, তার মা বিউটি বেগম ও পাতানো চাচা মিন্টু খানের নামে হত্যা মামলা করেন (যার নং-০৪)।