লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।
প্রকাশ : ২৮ অক্টোবর ২০২২(শুক্রবার) ০৯:৩০ এএম
লক্ষ্মীপুরে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে প্লাস দিয়ে চামড়া টেনে শিশু জাকির হোসেনের (১৪) শরীরে সিগারেটের আগুনের ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।খবর ক্রাইম রিপোর্টার২৪.কমের।
ঘটনার সময় চেয়ারে বেঁধেও তাকে বেদম পেটানো হয়। একপর্যায়ে হাতের আঙুলে সুই ঢুকিয়ে রক্তাক্ত জখমের পর শ্বাসরোধে হত্যাচেষ্টা করা হয়। শিশুটির চোখে মরিচের গুঁড়া লাগিয়ে সূর্যের দিকে তাকাতে বাধ্য করা হয়েছে। পরে শিশুটিকে অভিযুক্তরা ৪ দিন অবরুদ্ধ করে রাখে। এ বিবরণ তুলে ধরে আদালতে মামলা হয়েছে।
গতকাল (২৭ অক্টোবর) বৃহস্পতিবার বাদীর আইনজীবী মঞ্জুর আহমেদ তিতু জানান, শিশুকে নির্যাতনের পর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ৪ দিন ঘরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আদালতের বিচারক তারেক আজিজ মামলাটি আমলে নিয়েছেন। সদর মডেল থানার ওসিকে ঘটনাটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
বুধবার লক্ষ্মীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি (সদর) আদালতে জাকিরের বাবা আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এতে ৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
অভিযুক্তরা হলেন- দেলোয়ার হোসেন, গোফরান, মনির হোসেন, মাকছুদ আলম, মো. মনির ও শাহ আলম। তারা সদর উপজেলার চররমনী মোহন ইউনিয়নের চররমনী গ্রামের বাসিন্দা। বাদী আলমগীর একই গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেশায় একজন শ্রমিক।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তদের সঙ্গে আলমগীরের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। সেই জের ধরে গেল (১৮ অক্টোবর) মঙ্গলবার সকালে অভিযুক্ত শাহ আলমের ঘরে ডেকে নেওয়া হয় আলমগীরের ছেলে জাকিরকে। এ সময় তাকে চেয়ারে বসিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলে অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে তাকে (জাকির) বেদম পিটিয়ে প্লাস দিয়ে চামড়া টেনে শরীরের বিভিন্ন অংশে সিগারেটের আগুন লাগিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। এরপর হাতের আঙুলে সুই ঢুকিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। সবশেষ চোখে মরিচের গুড়া মেরে তাকে সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকতে বাধ্য করা হয়।
শিশুটির চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় ছেলেকে উদ্ধার করেন আলমগীর। কিন্তু অভিযুক্তদের ভয়ে ঘর থেকে বের করে শিশুটিকে হাসপাতালে আনা সম্ভব হয়নি। ঘটনার ৫ দিন পর তাকে গোপনে সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শিশুটির বাবা আলমগীর হোসেন বলেন, আমার ছেলেকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে চিকিৎসা করাতেও দেয়নি। এজন্য ৪ দিন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ছেলের কষ্ট দেখে সহ্য হচ্ছিল না। পরে গোপনে তাকে সদর হাসপাতাল ভর্তি করিয়েছি।
বক্তব্য জানতে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। মামলা করার বিষয় জানাজানি হওয়ার পর তারা আত্নগোপন করেছেন।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, আদালতের নির্দেশনা পেয়েছি। তদন্ত শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।খবর ক্রাইম রিপোর্টার২৪.কমের।