বাংলাদেশকে বিনিয়োগের আদর্শ স্থান হিসেবে আখ্যায়িত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জাপানী বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার সকালে টোকিওতে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি’র (জাইকা) সদর দপ্তরে জাপানী বিনিয়োগকারীদের এক সভায় বক্তৃতায় একথা বলেন তিনি।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, মন্ত্রী ওই সভায় বিনিয়োগকারীদের সকল বিনিয়োগের সর্বোচ্চ স্বচ্ছতারও নিশ্চয়তা দেন। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্মসচিব মো. আবদুল মালেক এ সময় বাংলাদেশে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে বিদ্যমান আইনগত সুবিধাসহ সরকারের অগ্রাধিকার ও সম্ভাব্য প্রকল্পগুলো নিয়ে একটি উপস্থাপনায় অংশ নেন।
এরপরই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে খোলামেলা মতবিনিময় করেন এবং তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। টোকিওতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকোনমিক মিনিস্টার ড. জীবন রঞ্জন মজুমদারসহ সফরকারী প্রতিনিধিদলের সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। জাপানী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজের মান ও নির্মাণ কৌশল অত্যন্ত উচ্চমানের। সড়ক যোগাযোগে জাপানের বিনিয়োগ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিকে সচল করেছে। তিনি ব্যবসায়ী তথা বিনিয়োগকারীদের সড়ক, সেতু, মেট্রোরেলসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
জাইকা’র ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত বিনিয়োকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সঙ্গে আয়োজিত সভায় জাপানের সড়ক, সেতু, মেট্রোরেলসহ নির্মাণ খাতের শীর্ষস্থানীয় ২০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। সভা সঞ্চালনা করেন জাইকা’র বাংলাদেশ অফিসের ট্রান্সপোর্ট অ্যাডভাইজার তাকাসি হীরামাতসু।
এদিকে ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার যাতায়াত ও যানজট নিরসনে আরো দু’টি মেট্রোরেল রুট (মেট্রোরেল-১ এবং মেট্রোরেল-৫) নির্মাণে এবং ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণে জাপান সরকার ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বুধবার দুপুরে জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী আকিহিরো অহতা’র সঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়।
যমুনা নদীর তলদেশ দিয়ে ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেল নির্মাণে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে জাপানের পরিবহনমন্ত্রী বিষয়টি জাইকা’র সঙ্গে পরামর্শ করে ত্বরান্বিত করা হবে বলে জানান।
ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা হালনাগাদ কাজ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী এ সময় জানান।
জাপান সরকারের অর্থায়নে কালনা সেতু নির্মাণে ইতোমধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। প্রয়োজনীয় নকশা প্রণয়নের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহনমন্ত্রীকে এ সময় অবহিত করা হয়। বৈঠকে জাপানের ভূমি, অবকাঠামো, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ও জাইকা’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। -বাসস