যশোর বোর্ডে ভয়াবহ ফল বিপর্যয়ের তিন কারণ
এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ডে ভয়াবহ ফল বিপর্যয় ঘটেছে। এ বছর মাত্র ৪৬ দশমিক ৪৫ ভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। প্রধানত তিন কারণে এ বিপর্যয় নেমে এসেছে বলে ধারণা করছেন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
কারণ তিনটি হলো: ইংরেজি প্রশ্ন কঠিন হওয়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজব।
রবিবার ফলাফল প্রকাশের পর ফল বিপর্যয়ের কারণ প্রসঙ্গে যশোর শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র ক্রাইম রিপোর্টার ২৪.কমকে জানান, শিক্ষার্থীরা তাদের বলেছে এ বছর ইংরেজি প্রশ্ন কঠিন হয়েছে। ফলাফলেও তা স্পষ্ট— যদিও কোনো বোর্ডই নিজেরা প্রশ্নপত্র তৈরি করে না। বোডের্র প্রশ্নপত্র লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া এইচএসসির নির্বাচনী পরীক্ষার আগে থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণেও শিক্ষার্থীদের শেষ মুহূর্তের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবও শিক্ষার্থীদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পরীক্ষার আগেরদিন কথিত প্রশ্নপত্র নিয়ে শিক্ষার্থীরা চর্চা করে পরীক্ষার হলে গিয়ে প্রকৃত প্রশ্নপত্রের সঙ্গে মিল পায়নি। এটাও ফল বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ।
যশোর বোর্ডে গত ৫ বছর ধারাবাহিকভাবে ফল নিম্নমুখী হওয়ার পর এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৬ দশমিক ৪৫ ভাগ। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৬০ দশমিক ৫৮, আর ২০১৩ সালে এ হার ছিল ৬৭ দশমিক ৪৯ ভাগ। এ বছর জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যাও নেমে এসেছে অনেকে নিচে। এ সংখ্যা ১ হাজার ৯২৭ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ২৩১, আর ২০১৩ সালে ছিল ৪ হাজার ৭৪০।
যশোর বোর্ডের প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, যশোর বোর্ডে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় ১ লাখ ১৪ হাজার ২৮১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫৩ হাজার ৮৭ জন। এদের মধ্যে ছাত্র ২৭ হাজার ৫০ ও ছাত্রী ২৬ হাজার ৩৭। পাসের হার ৪৬ দশমিক ৪৫। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৯২৭ জন। পরীক্ষায় বহিস্কৃত হয়েছিল ১২৯ জন।
এ বছর যশোর বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৩ হাজার ৭১০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ৯ হাজার ৪৩০ জন। পাসের হার ৬৮ দশমিক ৭৮ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৪৭০ জন। মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৭২ হাজার ৬৮৫ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ২৭ হাজার ২৫৮ জন। পাসের হার ৩৭ দশমিক ৫০ ভাগ। এই বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৮৬ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৮ হাজার ৪৯৯ জন ছাত্র ছাত্রীর মধ্যে পাস করেছে ১৬ হাজার ৩৯৯ জন। পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮১ ভাগ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৭১ জন ছাত্র ছাত্রী।
যশোর বোর্ড সার্বিক ফলাফলে গত বছরের তুলনায় ব্যাপক ফল বিপর্যয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বোর্ডের থেকেও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। গত বছরের মতো এবারো সিংহভাগ শিক্ষার্থী ইংরেজিতে কৃতকার্য হতে পারেনি। এ বছর যশোর বোর্ডে ইংরেজিতেই ফেল করেছে ৪৯ দশমিক ০৯ ভাগ শিক্ষার্থী। কারণ হিসেবে ইংরেজি প্রশ্নপত্র কঠিন হয়েছে বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।